নীরব মৃত্যুদণ্ড - Bengal News Room
বর্তমানে বাংলা চলচ্চিত্র জগতে অনেক নতুন ধরনের সিনেমা তৈরি হচ্ছে। উন্নত ধরনের ছবি তৈরির জন্য যে সবসময় চলচ্চিত্র জগতের কলাকুশলিরাই এগিয়ে আসছেন তা নয়। অন্যান্য পেশার মানুষেরাও সমানভাবে আগ্রহ দেখাচ্ছেন। ঠিক এইরকমই এক ডাক্তারবাবু তাঁর নতুন ছবির পরিচালনা করলেন। বলা বাহুল্য, এটি তাঁর পরিচালিত প্রথম ছবি।
২০২০ থেকে ২০ ২১। এই সময়টা এক অদ্ভুত পরিস্থিতির মধ্যে কাটিয়েছে বিশ্বের প্রত্যেকেই। আর এই করোনাকালে সব থেকে বেশি লড়াই করেছেন ডাক্তাররা। সেই অভিজ্ঞতাকে সঞ্চয় করেই ডাক্তার সৌমিক চৌধুরী তাঁর পরিচালনায় প্রথম বাংলা ছবি তৈরি করলেন যার নাম নীরব মৃত্যুদণ্ড।

এই এক অদ্ভুত ক্লান্তিকাল। অতি মারি। সারা বিশ্ব তোলপাড়, জীবন যেখানে অনিশ্চিত, জীবিকা সেখানে শুধুমাত্র টিকে থাকার অবলম্বন মাত্র। অরিত্র তিয়াসা আর তাদের এক রতি পাভেলের ছোট্ট নৌকাটাও এই ঝড়ে বেসামাল। অস্থির জীবন আরো অস্থিরতর করে দেয় সম্পর্কের আট। তিয়াসার জীবনে ঝড়ো হাওয়ার মতো আসে এক তরতাজা যুবক জায়েদ। দৈনন্দিন  দম বন্ধ জীবনে সেই এক ঝলক মুক্তির উদ্দাম আবেগ ভাসিয়ে দেয় তিয়াসাকে নিষিদ্ধ পরকীয়ার নেশায়। হঠাৎ নেমে আসে চরম বিপর্যয় ,ছোট্ট পাভেলের আকস্মিক মৃত্যু ,তাও আবার বিষক্রিয়ায় ।
চিকিৎসক রাইয়ান রায়ের রিপোর্টের ভিত্তিতে সন্তানের হত্যার অভিযোগে মা উঠে কাঠগড়ায়। ইথিলিন গ্লাইকল পয়জনিং। সরকারি উকিলের ক্ষুরধার যুক্তি আর রায়ান রায়ের ফরেনসিক রিপোর্ট যখন তিয়াসার মৃত্যুদন্ড নিশ্চিত করে তুলেছে তখন তার পক্ষে শহরের অন্যতম গ্ল্যামারাস আধুনিক ও দক্ষ ডিফেন্স লয়ার অদিতি বোস হাজির করেন জেনেটিক বিশেষজ্ঞ ডক্টর অনলাভ রায় চৌধুরীকে।
 তা সাক্ষ্য ইথিলিন গ্লাইকল পয়জনিং এর সঙ্গে হুবহু মিলে যায় জন্মগত একটি অসুখ মিথাইল মেলোনিক এসিডিমিয়া। সুতরাং পাভেলের মৃত্যুর কারণ বিষক্রিয়া নাও হতে পারে। বেনিফিট অফ ডাউট এ জামিন পায় তিয়াসা। কিন্তু এ কোন পৃথিবী ? মাত্র কয়েক মাসের ব্যবধানে তার খুব কাছের পরিচিত দুনিয়াই এখন তার দিকে তাকিয়ে আছে চরম অবিশ্বাস আর সন্দেহের দৃষ্টিতে ।ব্যতিক্রম শুধু তার স্বামী অরিত্র। নিজেদের সন্তানের সম্ভাব্য হত্যাকারিনীর স্ত্রীর পাশে তার অনড় অবস্থান বিস্মিত করে সকলকে। ইতিমধ্যে ঘটনা মন নয় অন্যদিকে |
 জেলে থাকতে তিয়াসা জানতে পারে যে সে দ্বিতীয়বারের জন্য অন্তঃসত্ত্বা। যথাসময়ে দ্বিতীয় সন্তান জন্মগ্রহণ করে এবং আবার সেই শিশুর অসুস্থতার ঘটনার পুনরাবৃত্তি। এবার সতর্ক পরিবার অনতিবিলম্বে হাসপাতালে ভর্তি করায় ও শিশুটি পান রক্ষা হয়। অমোঘ নিয়তির মতো পরীক্ষার রিপোর্ট আসে, অসুস্থতার কারণ ইথিলিন গ্লাইকল পয়েজনিং।
আবার সন্তান হত্যা আবার প্রয়োজন ইন অকাট্য প্রমাণ। লায়ন রায়ের পয়জনিং তত্ত্ব প্রমাণিত সমাজ শিউরে ওঠে মাতৃত্বের এই নৃশংস রূপ দেখে। তিয়াশার জামিন নাকোঢ হয় এবং পাভেলের হত্যার কারণে তার মৃত্যুদণ্ডের সাজা হয়। সবকিছু শেষ হয়েও কিছু যেন বাকি থাকে। একটা ইমেইল আসে রায়ান রায়ের কাছে। সেই মিলেই জানা যায় এক ভয়াবহ ষড়যন্ত্রের কথা। কিভাবে সুপরিকল্পিতভাবে প্লট করে এই মৃত্যু ঘটানো। কে দায়ী এই ছোট্ট শিশুটির মৃত্যুর জন্য? আর এটা জানতে হলে দেখতে হবে  "নীরব মৃত্যুদন্ড"।

No comments:

Post a Comment

Pages