বাংলা ছবি আস্তে আস্তে চেষ্টা করছে একটা নতুন দিগন্ত খোলার। সমসাময়িক বেশ কিছু ছবি আমাদের দেখিয়েছে যে নতুন ধারার সংযোজন করার চেষ্টায় বাংলা ছবি অনেক বেশি মনোযোগ দিয়েছে। সব ক্ষেত্রে যে ভীষণ সফল না হলেও পালাবদলের স্লোগান যে লিখে দিয়ে যাচ্ছে, তা নিশ্চিত। সেই পালাবদল করতে চাওয়া ছবির দলে নতুন নাম অবশ্যই 'কোহিনূর'। নতুন পরিচালক সৌরভ দাস তার দলবলকে নিয়ে বানিয়েছেন আদ্যন্ত নিরীক্ষামূলক এই সায়েন্স-ফিকশন ছবি। ছবিতে বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন রজতাভ দত্ত,সৌরভ দাস, সৌমী দত্ত রায় সহ আরো অনেকে।
বাঙালি এখনো পর্যন্ত বাংলা সিনেমার মূল হাব কলকাতাকে ধরে নিলেও বর্ধমানের এক তরুণ দলের তৈরি এই ছবি যেন বাংলা ছবির ভরকেন্দ্র কলকাতা থেকে আরও বেশি করে বড় করে দেয়। এই ছবি সাহসী পদক্ষেপ, কারণ সৌরভের এই ছবির নব্বই শতাংশের বেশি ভিএফএক্স নির্ভর। ইতিমধ্যেই 'কোহিনূর' ছবির জন্য এবারের টেলিসিনে অ্যাওয়ার্ডে আগামীর সম্ভাবনাময় পরিচালকের পুরস্কার পেয়েছেন সৌরভ।
সম্প্রতি কলকাতার এক মাল্টিপ্লেক্সে ছবির এক বিশেষ শোতে উপস্থিত ছিল ছবির কলাকুশলীরা। পরিচালক সৌরভ পেশায় ভিএফএক্স আর্টিস্ট। পরিচালক শমীক রায়চৌধুরীর পরে আরও একজন ভিএফএক্স আর্টিস্ট পরিচালকের আসনে। সৌরভের কথায়, "অনেকটা ডিটেইলিং দিয়ে আমরা ছবিটা তৈরি করেছি। ছবিটা দেখলেই সেটা সবাই বুঝতে পারবেন।" কর্মসূত্রে বাইরে চলে যাওয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও বাংলায় থেকে যাওয়া প্রসঙ্গে সৌরভের পরিষ্কার বক্তব্য, "আমার সব সময় মনে হয়েছিল যে বাংলা ছবির জন্য কিছু একটা করা উচিত। তাই আমি যতটা সম্ভব একটা চিত্রনাট্য মেনে ঠিকভাবে কাজ করেছি।" এই ছবির শেষে আগামী পর্বের আভাসও দিয়েছেন পরিচালক।
ছবির অন্যতম অভিনেতা ও প্রযোজক সৌমী বলেন, "আমি এবং আমাদের পরিচালক সৌরভ দুজনেই ছবির জগতে পথপ্রদর্শক হিসেবে সত্যজিৎ রায়কে মানি। আর দশজন বাঙালির মতোই সত্যজিৎ রায়ের আমাদের কাছে একটা আলাদা জায়গায় থাকেন। ওঁর সায়েন্স-ফিকশন নিয়ে কাজ করার যে প্রবণতা, সেটা আমাদেরকে খুব প্রভাবিত করেছে। আর বাংলার প্রতি একটা আলাদা ভালোবাসা তো আছেই।"
ছবিটা কোন জায়গায় আলাদা বলতে গিয়ে সৌরভ দাস বলেন, "পুরোটাই সায়েন্স-ফিকশন এবং পুরোটাই ভিএফএক্স, এরকম কাজ বাংলায় সেভাবে হয়নি। তাই বলতেই পারি, আমাদের যে ট্র্যাক, সেটা বাংলা ছবির বর্তমান জায়গায় দাঁড়িয়ে একটু আলাদা।"
ছবির অন্যতম অভিনেত্রী মৌবনী দলুই ছবির একশন নিয়ে বলতে গিয়ে বলেন, "সত্যিই এইরকম অ্যাকশন ছবি বাংলায় এর আগে হয়নি। আর এই ছবির অ্যাকশন কোরিওগ্রাফি আমাদের পরিচালক সৌরভ দাসের নিজেরই করা। প্রত্যেকদিন খুব নিয়ম করে এই অ্যাকশনগুলো উনি আমাদেরকে করিয়েছেন। প্রায় চার বছরের নিরলস পরিশ্রম রয়েছে। সেই জন্য এই ছবিটা আমাদের কাছে স্পেশ্যাল এবং আমার মনে হয় দর্শকদেরও ছবিটা স্পেশ্যাল বলেই মনে হবে।"
No comments:
Post a Comment