বেঙ্গল বিসনেস কাউন্সিলের অ্যানুয়াল কনক্লেভ - Bengal News Room

বেঙ্গল বিসনেস কাউন্সিলের অ্যানুয়াল কনক্লেভ

Share This
কথায় বলে বাঙালি দ্বারা নাকি ব্যবসা হবে না। যদিও কথাটা সর্বাঙ্গীন সত্য নয়। অনেক বড় বড় শিল্পপতি আছেন যারা বাঙালি। কিন্তু বর্তমান সমাজে বাঙ্গালীরা কি কোথাও একটু পিছিয়ে পড়ছে। কোথাও কি তাদের মধ্যে আত্মবিশ্বাসের অভাব ঘটছে। এই সব কিছুই খতিয়ে দেখা হল বিজনেস কনক্লেভে। যাঁর ট্যাগ লাইন ছিল  "আর কবে? এবার হবে বাঙালির ব্যবসায় আগ্রগামী " | 

এই সম্মেলনের ছয় দফা কর্মসূচির লক্ষ্য ছিল আরও বেশি সংখ্যক বাঙালিকে ব্যবসাকে পেশা হিসেবে গ্রহণে উৎসাহিত করা। এই কর্মসূচির মূল বিষয়গুলির মধ্যে রয়েছে: বাঙালিদের মালিকানাধীন বিদ্যমান স্টার্ট-আপ এবং ছোট ব্যবসাগুলিকে তাদের আকার বৃদ্ধিতে সহায়তা করার জন্য প্রচার করা; কাউন্সিল সদস্যদের মধ্যে অভ্যন্তরীণ ব্যবসায়িক সহযোগিতাকে উৎসাহিত করা; কাউন্সিল সদস্যদের জন্য সহযোগিতামূলক এবং সহযোগিতামূলক পদ্ধতিতে ব্যবসায়িক উন্নয়নকে উৎসাহিত করা; তাদের প্রভাবিত করে এমন নীতিগত বিষয়গুলি সম্পর্কে সরকারের সাথে তাদের মিথস্ক্রিয়ায় সদস্যদের প্রতিনিধিত্ব করা; এই লক্ষ্যগুলি অর্জন এবং ধারাবাহিকতা নিশ্চিত করার জন্য নিবেদিত একটি সংস্থা প্রতিষ্ঠা করা। অর্থনীতিবিদ অভিরূপ সরকার বাংলার ব্যবসার শিল্প কাঠামো এবং জাতীয় বাজার নীতির উপর আলোকপাত করেন।  "বাংলা একসময় শিল্পে শীর্ষস্থানীয় ছিল, এমনকি মহারাষ্ট্র এবং গুজরাটের চেয়েও এগিয়ে। স্বাধীনতার পর, প্রতিষ্ঠিত শিল্পগুলির সাথে আমাদের প্রাথমিক সুবিধা ছিল। তবে, কিছু কারণ উল্লেখযোগ্য সমস্যার সৃষ্টি করেছিল। বাংলায় উপস্থিত শিল্পগুলি মূলত ব্রিটিশ কোম্পানিগুলি ছিল যারা দেশীয় বাজারের পরিবর্তে রপ্তানি, বিশেষ করে চা, পাট এবং কয়লার উপর মনোযোগ দিয়েছিল। বিপরীতে, মহারাষ্ট্র মূলত দেশীয় ব্যবহারের জন্য উৎপাদন করছিল," তিনি জানান । 


পরবর্তী অধ্যায়ে আলোচনা হয় স্বাস্থ্য জগতের পরিকাঠামো নিয়ে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন চক্ষু রোগ বিশেষজ্ঞ ডাক্তার দেবাশীষ ভট্টাচার্য যিনি দিশা হসপিটাল এর কর্ণধার, উপস্থিত ছিলেন ডক্টর রুপালি বসু উডল্যান্ড হসপিটাল এর প্রাক্তন ম্যানেজিং ডিরেক্টর। ডক্টর অয়নাভ  দেবগুপ্ত  পূর্ব ভারতের মনিপাল হসপিটাল এর চিফ রিজিওনাল অফিসার। আলোচনা সভার মধ্যস্থতা করছিলেন ডঃ সোমনাথ চ্যাটার্জী সুরক্ষা ডায়াগনস্টিকসের কর্ণধার।


শুরুতেই দেবাশীষ ভট্টাচার্য জানান যে তারা চার বন্ধু মিলে অত্যন্ত ঝুঁকি নিয়ে দিশা হসপিটালটি তৈরি করেন সাধারণ মানুষের জন্য। আজ গোটা কলকাতার সহ পশ্চিমবঙ্গ জুড়ে তাদের বহু শাখা  হয়েছে। ডক্টর রুপালি বসু জানান যে,  চিকিৎসা ক্ষেত্র কে ব্যবসায়ের আওতায় না এনে যদি সেটা পরিষেবার আওতায় রাখা যায় তাহলে এই রোগী এবং ডাক্তার উভয়ই উপকৃত হবে এবং প্রত্যেকেই সমানভাবে ভালো পরিষেবা পাবে। 


বাঙালি আলোচনা সভা করবে অথচ সেখানে খাওয়া-দাওয়ার কথা থাকবে না সেটা তো হতে পারে না। তাই অন্যান্য ব্যবসায়ী দিক যেরকম ছিল সে রকম  সফল খাদ্য ব্যবসায়ীদের ও একটি আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। উপস্থিত ছিলেন চাউমিন, আউধ ১৫৯০,  চ্যাপ্টার টু  এর কর্ণধার শ্রী দেবাদিত্য চৌধুরী। কে. সি দাস মিষ্টির দোকানের কর্ণধার শ্রী ধিমান দাস। পিয়ারলেস হোটেলের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীমতি দেবশ্রী রায় সরকার, আদিত্য গ্রুপের ম্যানেজিং ডিরেক্টর শ্রীমতি রোশনি আদিত্য এবং অনুষ্ঠানটির মধ্যস্থতা করেছেন,  শ্রী মেঘদূত রায় চৌধুরী চিফ ইনোভেশন অফিসার টেকনো ইন্ডিয়া গ্রুপ। অনুষ্ঠানে শ্রী দেবাদিত্য চৌধুরী জানান,  তার হাত ধরেই প্রথম কলকাতায় জমাটোর পথচলা শুরু হয়। বর্তমানে চাওম্যান এর ৫৪ টি শাখা আছে। কে সি দাসের কর্ণধার শ্রীধিমান দাস চানান রসগোল্লা তৈরীর শুরুর কথা এবং তার সাথে ইনি এটাও বলেন যে তার চিন্তা ভাবনায় আছে রোবট যদি অপারেশন করতে পারে তাহলে রোবট কেন মিষ্টি বানাতে পারবেনা। আগামী দিনে এই বিষয়ে তিনি নতুন কিছু আবিষ্কার করতে চান মিষ্টান্ন জগতে | তিনি জানান রসগোল্লা যেরকম তাদের হাত ধরেই প্রথম এসেছিল তাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্নতা বজায় রাখার জন্য নতুন কিছু পদক্ষেপ তিনি আনতে চান মিষ্টান্ন জগতে। ছোট থেকে বড় সব ধরনেরই ব্যবসায়িক আলোচনা-পর্যালোচনার মধ্য দিয়ে অনুষ্ঠিত হয় এই কনক্লেভটি। 


No comments:

Post a Comment

Pages